ঢাকা,শনিবার, ১৮ মে ২০২৪

পিবিআই জমি অধিগ্রহণ দুর্নীতি চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছে সিআইপি ইদ্রিস

বার্তা পরিবেশক :: দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এর মামলায় গ্রেফতার মোহাম্মদ ইদ্রিস সিআইপি রিমান্ডে চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছে। পাঁচদিনের রিমান্ডে তার কাছ থেকে পিবিআই জমি অধিগ্রহণ দুর্নীতি সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেয়েছে দুদক। আরো অধিকতর তথ্য পেতে দুদকের আবেদনের প্রেক্ষিতে ইদ্রিস সিআইপির আরো পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।

তবে রিমান্ড মঞ্জুর হওয়া এই মামলার আরেক শীর্ষ আসামী এড. নূরুল হক জামিন পেয়ে লাপাত্তা হয়ে গেছে। তাই তাকে রিমান্ডে আনা যায়নি। তার জামিন বাতিলের জন্য আদালতে আবেদন করবে দুদক।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদক চট্টগ্রামের সমন্বিত জেলা কার্যালয়-২ এর উপ-সহকারী পরিচালক মো. শরিফ উদ্দীন এই তথ্য জানান।
তিনি জানান, ইদ্রিস সিআইপি রিমান্ডে স্বীকার করেছেন, পিবিআই জমি অধিগ্রহণে টাকা আত্মসাতে টাকা প্রদানকারী ভুমি অধিগ্রহণ শাখার লোকজন ও টাকা গ্রহণণকারীরা সমানভাবে জড়িত। দুপক্ষ যোগসাজস করে ভুয়া কাগজপত্র দেখিয়ে টাকাগুলো আত্মসাৎ করেছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, এই টাকা জালিয়াতিতে জড়িত বেলায়েত হোসেন উচ্চ আদালতে আগাম জামিন আবেদন করেছেন। তবে আদালত তার জামিন নামঞ্জুর করে আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে তাকে নিম্ন আদালতে হাজির নির্দেশ দিয়েছেন।

কিন্তু ঘটনা ধামা চাপা দিতে আসামীরা বিভিন্ন ভাবে তদবির করছে বলে জানা গেছে।
তথ্য মতে, পিবিআই জমি অধিগ্রহণ দুর্নীতি এই মামলায় কক্সবাজার আদালতের আইনজীবী নুরুল হক, ইদ্রিস সিআইপি ও বেলায়েত হোসেনসহ একটি সিন্ডিকেট জড়িত। এই মামলায় গত ২ মার্চ এড. নূরুল হক ও ইদ্রিস সিআইপিকে গ্রেফতার সক্ষম হন দুদক। পরে বিশেষ শর্তে জামিন পান নূরুল হক।
আলোচিত মামলাটির অন্যতম আসামি হিসেবে কক্সবাজার এলএ শাখার সাবেক অতিরিক্ত ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তা বিজয় কুমার সিংকে গত ১৫ মার্চ চট্টগ্রামের এমইএস কলেজ গেইট এলাকা থেকে গ্রেফতার করে দুদক।
জানা গেছে, কক্সবাজারের কলাতলীর ঝিলংজা মৌজায় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেষ্টিগেশনের (পিবিআই) অফিস ভবন নির্মাণ প্রকল্পের জন্য কক্সবাজার জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের এল.এ ০৪/২০১৮-১৯ইং নং মামলা মূলে বি.এস ১৭০৫০, ২০৩০৭, ২০৩০৬ ও ২০১৬৩ দাগের প্রায় এক একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়। জমি অধিগ্রহণে ক্ষতিপূরণের টাকা লোপাটে একটি সিন্ডিকেট গঠন করা হয়। যারা বিভিন্ন নামে-বেনামে প্রায় ২৯ কোটি ২৯ লাখ টাকা উত্তোলন করে আত্মসাৎ করেছে বলে অভিযোগ পায় বিভিন্ন তদন্ত সংস্থা।
জমির প্রকৃত মালিকদের অভিযোগ, কৌশলে মোটা অঙ্কের ঘুষের বিনিময়ে সিন্ডিকেট সদস্যদের নামে-বেনামে ক্ষতিপূরণের চেক ইস্যু করে সরকারি টাকা আত্মসাতের সুযোগ করে দেন সরকারি কর্মকর্তারা। একই সাথে অবকাঠামো না থাকা সত্ত্বেও ভুয়া অবকাঠামো দেখিয়ে কোটি টাকার বেশি আত্মসাৎ করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদক চট্টগ্রামের সমন্বিত জেলা কার্যালয়-২ এর উপ-সহকারী পরিচালক ও মো. শরিফ উদ্দীন বলেছেন, জামিন পরবর্তী বিশেষ ব্যবস্থায় এড. নূরুল হককে পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করা হলেও তাতে অসহযোগিতা করেছেন তিনি। আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের জিম্মায় তাদের চেম্বারে রিমান্ড জিজ্ঞাসাবাদের আদেশ দেয়া হয়। কিন্তু জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আমরা তাকে পাইনি। নানাভাবে যোগাযোগ ও চেষ্টা করেও তার কোনো হদিস মিলছে না।
এই টাকা আত্মসাতে নূরুল হক ও ইদ্রিস সিআইপির স্ত্রীরাও জড়িত রয়েছে। উল্লেখ্য, বাতিলকৃত খতিয়ান দেখিয়ে টাকা উত্তোলন করে চিহ্নিত জালিয়াতচক্র। জমি না থাকলেও জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ টাকা হাতিয়ে নেয়া হয়েছে। এরই প্রেক্ষিতে তদন্তে নামে দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদক। ঘটনার প্রাথমিক সত্যতাও পায় সরকারি তদন্ত সংস্থাটি। দুদকের অনুসন্ধান চলমান রয়েছে।

পাঠকের মতামত: